গাজাবাসীর দুরবস্থার কারণ ও মুক্তির পথ
গাজার মুসলিমদের নিদারুণ অবস্থা দেখে অশ্রুপাত, হুংকার, ইহুদিদের পুণ্য বয়কট, সুযোগ পেয়ে ইহুদি হত্যা ইত্যাদি বহু হয়েছে। এবার সময় হয়েছে গাজাবাসী ও সমগ্র মুসলিম জাতির দুর্দশার আসল কারণ কী সেটা অন্বেষণ করা। যারা নূন্যতম ইতিহাস পড়েছেন তাদের অজানা নয় মুসলিম জাতির সোনালী ইতিহাস। শুধু আরব অঞ্চল নয়, বলা যায় প্রায় পৃথিবী যারা শাসন-ব্যবস্থার অধীনে নিয়ে এসেছিল তারা ছিল মুসলিম। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, শিক্ষায়-দীক্ষায় মুসলিমরা ছিল সেরা। সেই মুসলিমদের কেন আজ এমন শোচনীয় অবস্থা হলো সেটা কোনো রহস্যময় বিষয় নয়।
.
মহান আল্লাহ বিশ্বনবীর মাধ্যমে যে জাতির উত্থান ঘটালেন সেই জাতির ওপর দায়িত্ব দিলেন সমগ্র পৃথিবীতে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যাবতীয় অন্যায়-অবিচার দূর করে ন্যায়-সুবিচার, নিরাপত্তা, শান্তি প্রতিষ্ঠা করার। এর জন্য আল্লাহ তাদের সাহায্য করবেন, বিজয় দান করবেন এবং পরকালে জান্নাত দান করবেন। এবং এও বলে দিলেন যে, তারা যদি সেটা না করে অর্থাৎ সেই দায়িত্ব পূর্ণ না করে তবে তিনি তাদের জায়গায় অন্য জাতিকে বিজয়ী করবেন এবং তাদের দিয়ে মুসলিমদের লাঞ্ছিত, পরাজিত, নিশ্চিহৃ করবেন (সূরা তওবা: ৩৯)।
.
এই সতর্কবাণী দেওয়ার পর কেউ যেন ভুলবশতও ইবলিশের প্ররোচনায় ভুলপথে পা না বাড়ায় সেজন্য তিনি মুসলিমদের কতগুলো দিকনির্দেশনাও দিলেন। যা অনুসরণ করলে তারা পথহারা হবে না, কর্তৃত্বহীন হবে না। সেই দিকনির্দেশনাগুলো হলো- জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র আল্লাহর দীন দিয়ে পরিচালিত করবে, আল্লাহর পথে প্রতিষ্ঠিত একজন নেতার আনুগত্য করবে, তাদের নেতা হবে একজন, নিজেদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করবে না, কোনো বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত করবে না, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম থেকে নিভৃত হবে না।
.
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো তারা আল্লাহর প্রতিটি হুকুমই লঙ্ঘন করে, অমান্য করে। শুধু তাই নয়, আল্লাহর দীন বাদ দিয়ে তারা মানবসৃষ্ট দীন জীবনে গ্রহণ করে নেয়। যার ফল হিসেবে নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি, দ্বন্দ্ব-সংঘাত সৃষ্টি, নেতাহীন জাতি, অশান্তিতে পতিত। আর এটি আপতত দৃষ্টিতে যেমন কর্মফল, অন্য দৃষ্টিতে লানত। কারণ সেই আয়াতেই আল্লাহ বলেছেন- তোমরা যদি দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বের না হও তবে তিনি তোমাদেরকে কঠিন শান্তি দিবেন। আজ গাজার মুসলিমদের যে অবস্থা সেটা আল্লাহর লানত ব্যতীত কিছু নয়।
.
এখন এই লানত থেকে মুক্তির উপায় কী সেটাই আলোচ্য বিষয়। যা অনেকে করছে। ইতোমধ্যে গাজাবাসীর জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে ইসরাইলের সাথে সমঝোতা, ইসরাইলের শক্তি হ্রাসপ্রাপ্ত করা অথবা ইসরাইলকে ধ্বংস করার প্রস্তাবনা দিয়েছে। যার কোনোটাই কার্যকরী হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ এরকম বহু প্রস্তাব গত ৬০-৭০ বছরে উত্থাপিত হলেও কোনো সমাধান হয় নাই। বরং যতদিন গড়িয়েছে তত খারাপ পরিস্থিতির দিকে অগ্রসর হয়েছে গাজাবাসী। তাহলে এখন মুক্তির উপায় কী? সেই উপায় তুলে ধরেছে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ।
.
হেযবুত তওহীদের প্রস্তাবনা হলো শুধু গাজাবাসী নয়, নিপীড়িত-নির্যাতিত সমগ্র মুসলিম জাতি মুক্তি লাভ করতে পারবে, পুনরায় কর্তৃত্বের আসনে ফিরতে পারবে, শিক্ষকের জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাড়াতে পারবে। যদি তারা জীবনের সকল অঙ্গনে এক আল্লাহকে হুকুমদাতা, বিধানদাতা, সার্বভৌমত্বের মালিক হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার কাজে বের হয়, মুমিনের সংজ্ঞা পূরণ করে, কলেমায় ঐক্যবদ্ধ হয়, একজন নেতার অনুসারী হয়। যে নেতা আল্লাহর হেদায়াতপ্রাপ্ত এবং আল্লাহর পথে প্রতিষ্ঠিত। এছাড়া যতভাবে চেষ্টা করা হোক সমাধান সম্ভব নয় আর সেটা প্রমাণিত।
No comments:
Post a Comment