Tuesday, 11 March 2025

 বনলতা সেন (বই রিভিউ)

“বনলতা সেন” জীবনানন্দ দাশের দারুণ এক সৃষ্টি। তিনি প্রকৃতিকে যেভাবে দেখেছেন, অনুভব করেছেন, প্রকাশ করেছেন তা অসামান্য। অনেকেই কবিতা লিখেছেন, লিখছেন। কিন্তু তার মতো করে প্রকৃতির প্রকৃত রূপ কবিতার মাধ্যমে মানুষের সামনে তুলে ধরা অপর কারো পক্ষে সহজ হবে না। অবশ্য এর পেছনে অনেক কারণও রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি কারণ- তিনি প্রকৃতির যে অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখেছেন, যে মুগ্ধতা লাভ করেছেন, যে অনুভব লাভ করেছেন তা বর্তমান প্রজন্মের সামনে নেই। প্রকৃতির সমস্ত সৌন্দর্য এখন প্রায় বিলীন, অনেক প্রকৃতির অস্তিত্ব নেই।

যেমন তিনি লিখেছেন-
ধানসিঁড়ি নদীর কিনারে আমি শুয়েছিলাম পৌষের রাতে
কোনদিন আর জাগব না জেনে!
ধানসিঁড়ি কথাটির সাথে অনেকেই পরিচিত। জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন বলে আর পাঠক পড়েছেন বলে। কিন্তু এখন কেউ যদি কথার অস্তিত্বের খোঁজ করতে যায় তবে সে খুঁজে পাবে না। কারণ জীবনানন্দ দাশের চোখে দেখা ধানসিঁড়ি নদীর সৌন্দর্য, জলপ্রবাহ, নৌকায় করে মানুষের পারাপার সবকিছুই আজ সঙ্কুচিত। যে কারণে প্রজন্মের কেউ চাইলেও তাঁর মতো লিখতে পারবে না। সেটা সম্ভব না।

অনত্র তিনি লিখেছেন-
হেমন্ত আসিয়া গেছে, চিলের সোনালী ডানা হয়েছে খয়েরি
ঘুঘুর পালক যেন ঝরে গেছে, শালিকের সেই আর দেরি!
আকাশে বহু-জাতের পাখি, সারি সারি পাখি, পাখির কণ্ঠস্বরে মুখরিত আকাশ। এই দৃশ্য আজকের সময় দেখতে পাওয়া দুর্লভ। আকাশে পাখি কেন, মেঘও দেখতে পাওয়া যায় না দূষিত আবহাওয়ার কারণে। জীবনানন্দ দাশ সেই পরিবেশ দেখতে পেয়েছেন বলে লিখতে পেয়েছেন বিষয়টি এমনও নয়। তিনি অনেক কিছু লিখেছেন যা আপাতদৃষ্টিতে দেখতে পাওয়া যায়নি। এখানেই তার শ্রেষ্ঠত্ব।

No comments:

Post a Comment

  গাজাবাসীর দুরবস্থার কারণ ও মুক্তির পথ গাজার মুসলিমদের নিদারুণ অবস্থা দেখে অশ্রুপাত, হুংকার, ইহুদিদের পুণ্য বয়কট, সুযোগ পেয়ে ইহুদি হত্যা ইত...