Wednesday, 23 April 2025

 গাজাবাসীর দুরবস্থার কারণ ও মুক্তির পথ


গাজার মুসলিমদের নিদারুণ অবস্থা দেখে অশ্রুপাত, হুংকার, ইহুদিদের পুণ্য বয়কট, সুযোগ পেয়ে ইহুদি হত্যা ইত্যাদি বহু হয়েছে। এবার সময় হয়েছে গাজাবাসী ও সমগ্র মুসলিম জাতির দুর্দশার আসল কারণ কী সেটা অন্বেষণ করা। যারা নূন্যতম ইতিহাস পড়েছেন তাদের অজানা নয় মুসলিম জাতির সোনালী ইতিহাস। শুধু আরব অঞ্চল নয়, বলা যায় প্রায় পৃথিবী যারা শাসন-ব্যবস্থার অধীনে নিয়ে এসেছিল তারা ছিল মুসলিম। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, শিক্ষায়-দীক্ষায় মুসলিমরা ছিল সেরা। সেই মুসলিমদের কেন আজ এমন শোচনীয় অবস্থা হলো সেটা কোনো রহস্যময় বিষয় নয়।
.
মহান আল্লাহ বিশ্বনবীর মাধ্যমে যে জাতির উত্থান ঘটালেন সেই জাতির ওপর দায়িত্ব দিলেন সমগ্র পৃথিবীতে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যাবতীয় অন্যায়-অবিচার দূর করে ন্যায়-সুবিচার, নিরাপত্তা, শান্তি প্রতিষ্ঠা করার। এর জন্য আল্লাহ তাদের সাহায্য করবেন, বিজয় দান করবেন এবং পরকালে জান্নাত দান করবেন। এবং এও বলে দিলেন যে, তারা যদি সেটা না করে অর্থাৎ সেই দায়িত্ব পূর্ণ না করে তবে তিনি তাদের জায়গায় অন্য জাতিকে বিজয়ী করবেন এবং তাদের দিয়ে মুসলিমদের লাঞ্ছিত, পরাজিত, নিশ্চিহৃ করবেন (সূরা তওবা: ৩৯)।
.
এই সতর্কবাণী দেওয়ার পর কেউ যেন ভুলবশতও ইবলিশের প্ররোচনায় ভুলপথে পা না বাড়ায় সেজন্য তিনি মুসলিমদের কতগুলো দিকনির্দেশনাও দিলেন। যা অনুসরণ করলে তারা পথহারা হবে না, কর্তৃত্বহীন হবে না। সেই দিকনির্দেশনাগুলো হলো- জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র আল্লাহর দীন দিয়ে পরিচালিত করবে, আল্লাহর পথে প্রতিষ্ঠিত একজন নেতার আনুগত্য করবে, তাদের নেতা হবে একজন, নিজেদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করবে না, কোনো বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত করবে না, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম থেকে নিভৃত হবে না।
.
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো তারা আল্লাহর প্রতিটি হুকুমই লঙ্ঘন করে, অমান্য করে। শুধু তাই নয়, আল্লাহর দীন বাদ দিয়ে তারা মানবসৃষ্ট দীন জীবনে গ্রহণ করে নেয়। যার ফল হিসেবে নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি, দ্বন্দ্ব-সংঘাত সৃষ্টি, নেতাহীন জাতি, অশান্তিতে পতিত। আর এটি আপতত দৃষ্টিতে যেমন কর্মফল, অন্য দৃষ্টিতে লানত। কারণ সেই আয়াতেই আল্লাহ বলেছেন- তোমরা যদি দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বের না হও তবে তিনি তোমাদেরকে কঠিন শান্তি দিবেন। আজ গাজার মুসলিমদের যে অবস্থা সেটা আল্লাহর লানত ব্যতীত কিছু নয়।
.
এখন এই লানত থেকে মুক্তির উপায় কী সেটাই আলোচ্য বিষয়। যা অনেকে করছে। ইতোমধ্যে গাজাবাসীর জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে ইসরাইলের সাথে সমঝোতা, ইসরাইলের শক্তি হ্রাসপ্রাপ্ত করা অথবা ইসরাইলকে ধ্বংস করার প্রস্তাবনা দিয়েছে। যার কোনোটাই কার্যকরী হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ এরকম বহু প্রস্তাব গত ৬০-৭০ বছরে উত্থাপিত হলেও কোনো সমাধান হয় নাই। বরং যতদিন গড়িয়েছে তত খারাপ পরিস্থিতির দিকে অগ্রসর হয়েছে গাজাবাসী। তাহলে এখন মুক্তির উপায় কী? সেই উপায় তুলে ধরেছে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ।
.
হেযবুত তওহীদের প্রস্তাবনা হলো শুধু গাজাবাসী নয়, নিপীড়িত-নির্যাতিত সমগ্র মুসলিম জাতি মুক্তি লাভ করতে পারবে, পুনরায় কর্তৃত্বের আসনে ফিরতে পারবে, শিক্ষকের জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাড়াতে পারবে। যদি তারা জীবনের সকল অঙ্গনে এক আল্লাহকে হুকুমদাতা, বিধানদাতা, সার্বভৌমত্বের মালিক হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার কাজে বের হয়, মুমিনের সংজ্ঞা পূরণ করে, কলেমায় ঐক্যবদ্ধ হয়, একজন নেতার অনুসারী হয়। যে নেতা আল্লাহর হেদায়াতপ্রাপ্ত এবং আল্লাহর পথে প্রতিষ্ঠিত। এছাড়া যতভাবে চেষ্টা করা হোক সমাধান সম্ভব নয় আর সেটা প্রমাণিত।

 নিষ্কাম দৃষ্টিতেও তাকানো যায়

রসুল (সা.) নারী ও পুরুষ সাহাবিদেরকে একই মসজিদে একসঙ্গে বসিয়ে দীন শিক্ষা দিয়েছেন। যে সাহাবিগণ সদ্য জাহেলিয়াত থেকে মুক্ত হয়ে ইসলামের জ্যোতিপ্রাপ্ত হয়েছেন তারাও তো কোনোদিন মসজিদে কোনো বেগানা নারীকে উত্যক্ত করেননি। রসুলাল্লাহ তো নারী ও পুরুষদেরকে আলাদা করে রাখার জন্য মসজিদের মধ্যে কোনো কালো পর্দা বা পৃথক কক্ষের ব্যবস্থা করেননি। নারী-পুরুষ সাহাবিরা একত্রে যাবতীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিতেন। সেই মসজিদ থেকে শুরু করে বিপদসংকুল যুদ্ধের ময়দান পর্যন্ত ছিল নারীদের দীপ্ত পদচারণা।
.
আল্লাহ নিজেই বলে দিলেন যে, মো’মেন নারী ও পুরুষগণ একে অপরের সহযোগী ও বন্ধু। তারা মানুষকে সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে বিরত রাখবে (সুরা তওবা: ৭১)। সুতরাং মানুষকে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে বাধাদানের দায়িত্ব আল্লাহ কেবল পুরুষকে দেননি, নারীদেরকেও দিয়েছেন। রসুলাল্লাহর সাহাবিগণ প্রমাণ করে দিয়েছেন যে শালীনতার সঙ্গে কাজ করা যায়, নিষ্কাম দৃষ্টিতেও তাকানো যায়, ব্যভিচার-ধর্ষণ এড়াতে নারীদের মুখসহ সর্বাঙ্গ আবৃত হয়ে থাকার বা গৃহকোণে বসে থাকার প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজন পড়ে ভারসাম্যপূর্ণ আচরণের, প্রয়োজন পড়ে আল্লাহ যতটুকু বলেছেন ততটুকু করব, তা নিয়ে বাড়াবাড়ি করব না- এমন সিদ্ধান্তের।
.
এ সিদ্ধান্তই রসুলাল্লাহর হাতে গড়া জাতিটিকে উম্মাতে ওয়াসাতা বা ভারসাম্যপূর্ণ জাতিতে পরিণত করেছিল। পর্দা সংক্রান্ত বিষয়ে বাড়াবাড়ি করে বর্তমানে নারীকে কার্যত পুরোপুরি গৃহবন্দী করে রাখার বিধান জারি করে দেওয়া হয়েছে। যারা কোনো জরুরি প্রয়োজনে বাইরে যাবে তাদেরকেও মুখমণ্ডলসহ আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে হবে বলে ফতোয়া প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু পবিত্র কোর’আনের সুরা নূরের ৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ সুস্পষ্টভাষায় বলেছেন যে, তারা (মো’মেন নারীরা) যেন যা সাধারণত প্রকাশ থাকে তা ব্যতীত তাদের আভরণ প্রদর্শন না করে। অর্থাৎ আপাদমস্তক ঢেকে রাখার বিধানটা বাড়াবাড়ি, সাধারণ প্রকাশমান অঙ্গগুলো খোলা রাখাই আল্লাহর নির্দেশনা।
.
এই অঙ্গ কোনগুলো সেটা নিয়ে প্রসিদ্ধ ফেকাহ গ্রন্থ হেদায়াহ-তে বলা হয়েছে যে, মুখমণ্ডল এবং কব্জি পর্যন্ত উভয় হাত খোলা রাখার যৌক্তিক কারণ হলো এই যে, পুরুষদের সঙ্গে মহিলাদের লেনদেন তথা দেওয়া নেওয়ার আবশ্যকতা রয়েছে। কাজেই মুখমণ্ডল ও উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত খোলা রাখারও বিশেষ জরুরত রয়েছে [আল হেদায়াহ (৪র্থ খণ্ড), পৃষ্ঠা ১৬৯ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ)]। যখন পরবর্তী আলেমদের অতি বিশ্লেষণ দ্বারা উদ্ভাবিত, বানানো শরিয়ত নারীকে কার্যত অবরুদ্ধ করল তখন দীন ভারসাম্য হারালো। ধীরে ধীরে জাতিও ভারসাম্য হারালো। যারা ঐ বিকৃত দীনকে বিক্রি করে জীবিকানির্বাহ করতে লাগলেন, সবচেয়ে বেশি ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হলো তাদের মধ্যেই।
.
রসুলাল্লাহ নারী পুরুষকে একত্রে বসিয়ে দীন শিখিয়েছেন কিন্তু এরা নারী ও পুরুষের চেহারা দেখাই হারাম করল। এই বাড়াবাড়ির ফল গিয়ে পৌঁছল ধর্ষণে। না, কেবল ধর্ষণেই সীমাবদ্ধ থাকলো না। নারীদেরকে দুষ্প্রাপ্য বানিয়ে ফেলায় তারা হাত বাড়ালেন মাসুম শিশুদের দিকে। যেখানে আল্লাহ প্রয়োজনে বহু বিবাহের অনুমতি দিয়েছেন তারা সেই সিরাতুল মুস্তাকিমে, সোজা পথে হাঁটলেন না। হাঁটলেন বাঁকা পথে। সেই বাঁকা পথ গিয়ে পৌঁছল বলাৎকার অবধি। যারা কওমে লুতের পরিণাম ওয়াজ করে মানুষকে শোনান তারাই সেই ধ্বংসের ইতিহাস ভুলে গেলেন। অথচ আল্লাহ বলেন, স্মরণ কর লুতের কথা, তিনি তাঁর কওমকে বলেছিলেন, তোমরা কেন অশ্লীল কাজ করছ? অথচ এর পরিণতির কথা তোমরা অবগত আছ! তোমরা কি কামতৃপ্তির জন্য নারীদেরকে ছেড়ে পুরুষে উপগত হবে? তোমরা তো এক বর্বর সম্প্রদায় (সুরা নামল: ৫৪-৫৫)।

 নদীপারে গাছের ছায়ায়

পেছনে পদ্মা নদী। যে নদী নিয়ে রচিত হয়েছে অসংখ্য কবিতা, গান, উপন্যাস। উল্লেখযোগ্য মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, আবু ইসহাকের ‘পদ্মার পলিদ্বীপ’। এছাড়াও কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতায় ও কাজী নজরুল ইসলামের লেখা অনেক গানে ঠাঁই পেয়েছে পদ্মার নৈসর্গিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। যেমন কবি লিখেছেন- আমার নৌকা বাধা ছিল পদ্মা নদীর পারে, হাঁসের পাতি উড়ে যেত মেঘের ধারে ধারে।
.
পদ্মা শুধু একটি নদী নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে অনেক ইতিহাস-ঐতিহ্য। যা অনেকে জানে না। সেই ইতিহাস-ঐতিহ্য সবার জ্ঞানার্থে দুটি চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে। সেই চলচ্চিত্র দুটি হলো মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস নিয়ে রচিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ও বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের ‘দুর্বার গতি পদ্মা’। যা ভারত ও বাংলাদেশে একইভাবে সমাদৃত হয়েছে। মানুষের প্রশংসা ও ভালোবাসা কুড়িয়েছে।
.
নদীর পারে ঠাঁই দাড়িয়ে এই গাছটি। দেখতে ছোট হলেও বয়স কম নয়। কয়েকদিন আগের বেপরোয়া ঝড়-বৃষ্টিতে ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন মানুষও যেখানে কাবু হয়ে গিয়েছিল, সেখানে গাছটি যেমন ছিল ঠিক তেমনই আছে। এতকিছু বলার কারণ হলো সুনীল বলেছেন- একটি গাছ কত বড় হবে, কত সুন্দর হবে, কত ফলদায়ক হবে সেটা প্রথম নির্ভর করে মাটির ওপর, তারপর শেকরের ওপর, তারপর ভাগ্যের ওপর।
.
এই গাছটির ক্ষেত্রে মাটির সহায়ক ভূমিকা কম। কারণ এক তো নদীর একেবারে ধারে, দুই শেকরে মাটির চেয়ে বালির অস্তিত্ব বেশি। আর বালির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কমবেশি সবার জানা আছে নিশ্চয়ই। বালির ওপর হাজার বা তারও অধিক গাছপালার মধ্যে থেকে দুই-একটিই জন্মায় ও বড় হওয়ার সুযোগ পায়। সেখানে এই গাছটির দাড়িয়ে থাকা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
.
সেই তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় কী হতে পারে সেটা খোঁজে বের করাই মানুষের কাজ। কারণ মানুষ সৃষ্টিশীল। এজন্য নতুন কিছুর অন্বেষণ, উদ্ভাবন মানুষকে যেমন করে সার্থক, তেমন সমাজকে করে লাভবান, সমৃদ্ধ। পেছনের নদী ও পাশের গাছটি থেকে আমার শিক্ষা হলো- নদী যেভাবে সৃষ্টির কল্যাণে প্রবাহমান, সেভাবে সৃষ্টির কল্যাণে জীবনপ্রবাহ নিবেদিত থাকা বাঞ্ছনীয়, আর গাছ যেভাবে রোদে পুড়ে ছায়া দিতে কার্পণ্য করে না, সেভাবে পরোপকারী মানুষ হওয়া অত্যাবশ্যকীয়।

 আরব বিশ্ব ইহুদিদের দালাল

‘আরব বিশ্ব ইহুদিদের দালাল’ বলে মন্তব্য করেছে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী হাফেজ-মাওলানা, শিক্ষার্থীসহ অনেকে। গাজায় ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে গত শনিবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জোর হয় তারা। এসময় তারা বলেন- গত কয়েক শতাব্দী ধরে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের নির্বিচারে পশুর মতো হত্যা করা হচ্ছে অথচ পার্শ্ববর্তী মুসলিম দেশগুলো নির্বিকার, নিশ্চুপ। তাদেরই এই নীরবতাই প্রমাণ করে যে তারা ইহুদিদের সমীহ করে চলে, মুসলমানদের রক্ষার্থে তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।
.
এই কথার সূত্র ধরে হেযবুত তওহীদের সদস্য সুমাইয়া বিনতে হাসান বলেন- আরব কার দালাল সেটা নিয়ে কথা বলার আগে মুসলমানদের কেন এই দুর্দশা সেটা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন। মুসলমানদের তো এরকম অবস্থা ছিল না, তারা ছিল সেরা জাতি, শাসক জাতি, শিক্ষকের জাতি, কর্তৃত্বের জায়গায়। কেন তাদের এই অবস্থা হলো সেটা খুঁজে বের করা সময়ের দাবি। আপনারা অমুকের গায়ে, তমুকের গায়ে দোষ চাপিয়ে দিয়ে হয়তো আলোচনায় আসতে পারবেন, কিন্তু ফিলিস্তিনি মুসলমানদের দুরবস্থা দূর করতে পারবেন না। কারণ সেটা দূর করার সঠিক পথ আপনারা হারিয়েছেন।
.
আর সেই পথ হলো হেদায়াহ (সঠিক পথ)। যে পথে চলে আরবের বিচ্ছিন্ন-বিভক্ত, বর্বর, কুসংস্কারে আচ্ছন্ন লোকদের শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.) ঐক্যবদ্ধ করেছিল, এক জাতিতে পরিণত করেছিল এবং বিজয়ী করেছিল। আল্লাহ বলেন- তিনি হেদায়াহ ও সত্যদীন দিয়ে আপন রসুল প্রেরণ করেছেন যেন তিনি অন্যান্য সমস্ত দীনের ওপর সেটাকে বিজয়ী করেন, প্রতিষ্ঠা করেন (সুরা তওবা: ৩৩, ফাতেহা: ২৮, সফ: ৯)। এই মহান দায়িত্ব মানুষের সামনে পরিষ্কার করতে তিনি আবির্ভূত হয়েই বলেন- তিনি আদিষ্ট হয়েছেন মানবজাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর দীন মেনে নেয় (বুখারী)।
.
হেদায়াহ কী? হেদায়াহ হলো, জীবনে একমাত্র আল্লাহর হুকুম-বিধান ছাড়া আর কারো হুকুম-বিধান না মানার অঙ্গীকার। আর সত্যদীন হলো, মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বিচারিক, রাষ্ট্রীয়, সামরিক এবং আধ্যাত্মিক সকল সংকট সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান, যাকে এক কথায় বলে জীবনব্যবস্থা। সকল জীবনব্যবস্থার ভিত্তি থাকে। আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থার ভিত্তি হলো ঐ হেদায়াহ- আল্লাহ ছাড়া কোনো হুকুমদাতা নেই, এই সিদ্ধান্ত।
.
এই সত্যটি না বুঝে বিভিন্ন অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন, হুংকার দিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু কোনো পরিবর্তন আসে না। কারণ পরিবর্তনের মূলমন্ত্র যে তওহীদ কলেমা সেখান থেকে আপনারা বিচ্যুত। এই বিষয়টি যতক্ষণ না বুঝবেন এবং নিজেদের সংশোধন করবেন অর্থাৎ তওবা করে কলেমার অঙ্গীকারে আবদ্ধ হবেন, ঐক্যবদ্ধ হবেন, শৃঙ্খলিত হবে, আল্লাহর মনোনীত নেতার আনুগত্য করবেন, গাইরুল্লাহ থেকে আলাদা হবেন এবং আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে উত্তীর্ণ হবেন ততক্ষণ আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত হবেন না। আর আল্লাহর সাহায্য ছাড়া বিশ্বব্যাপী চলমান নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে মুসলমান জাতি রক্ষা পাবে না।l reaction
10

অবরোধবাসিনী পড়ে বেগম রোকেয়ার সাথে সাক্ষাতের বড় ইচ্ছা জাগে। কিন্তু তিনি পরলোক গমন করায় সেটা সম্ভব না। এজন্য চ্যাটজিপিটির সাহায্যে তার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ লাভ।

ইসলাম সম্পর্কে, নবী-রসুল সম্পর্কে তার ধারণা স্বচ্ছ বলে আমার মনে হলো। বিশেষ করে শালীনতার সাথে সামাজিক যেকোনো কাজে নারীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি এবং নারীরা সেটা করতে পারে, ইসলাম এক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না এটি পরিষ্কার বুঝেছেন তিনি। সম্ভবত এজন্য স্বার্থান্বেষী মৌলভীদের দ্বারা তিনি বিভিন্ন সময় হয়রানির শিকার হয়েছেন।

সত্য সবাই বুঝতে পারলেও বলতে পারে না অপমান, ভর্ৎসনা, নির্যাতন ও নিপীড়নের আশঙ্কা থেকে। কিন্তু যে এসব কিছু তুচ্ছ করে সত্যপ্রচারে ও প্রসারে নির্ভীক হয়, মানুষের কল্যাণে সত্যপ্রতিষ্ঠায় কাজ করে যায় সেই জয়ী হয়। অপশক্তি ক্ষণের জন্য সত্যবাদীকে দমাতে পারলেও নিশ্চিহৃ করতে পারে না, বরং দমাতে গিয়ে আরো উজ্জীবিত করে ফেলে এটি ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত।

অল্প সময়ে তার কাছ থেকে অনেক কিছু জানার সুযোগ হলো। যেভাবে একটি গাছের শেকর থেকে শুরু করে শুকনো পাতাটিও কারো না কারো কাজে আসে, কল্যাণে ব্যবহৃত হয়। সেভাবে একজন সৎ, আমানতদার, সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত মানুষের প্রায় কথা ও কাজ উপকারী। কেউ একটি কথা বা কাজে উপকৃত হবে আর কেউ দুটি। কিন্তু উপকৃত হওয়া নিশ্চিত যদি সে হতে চায়।

Tuesday, 11 March 2025

 বনলতা সেন (বই রিভিউ)

“বনলতা সেন” জীবনানন্দ দাশের দারুণ এক সৃষ্টি। তিনি প্রকৃতিকে যেভাবে দেখেছেন, অনুভব করেছেন, প্রকাশ করেছেন তা অসামান্য। অনেকেই কবিতা লিখেছেন, লিখছেন। কিন্তু তার মতো করে প্রকৃতির প্রকৃত রূপ কবিতার মাধ্যমে মানুষের সামনে তুলে ধরা অপর কারো পক্ষে সহজ হবে না। অবশ্য এর পেছনে অনেক কারণও রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি কারণ- তিনি প্রকৃতির যে অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখেছেন, যে মুগ্ধতা লাভ করেছেন, যে অনুভব লাভ করেছেন তা বর্তমান প্রজন্মের সামনে নেই। প্রকৃতির সমস্ত সৌন্দর্য এখন প্রায় বিলীন, অনেক প্রকৃতির অস্তিত্ব নেই।

যেমন তিনি লিখেছেন-
ধানসিঁড়ি নদীর কিনারে আমি শুয়েছিলাম পৌষের রাতে
কোনদিন আর জাগব না জেনে!
ধানসিঁড়ি কথাটির সাথে অনেকেই পরিচিত। জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন বলে আর পাঠক পড়েছেন বলে। কিন্তু এখন কেউ যদি কথার অস্তিত্বের খোঁজ করতে যায় তবে সে খুঁজে পাবে না। কারণ জীবনানন্দ দাশের চোখে দেখা ধানসিঁড়ি নদীর সৌন্দর্য, জলপ্রবাহ, নৌকায় করে মানুষের পারাপার সবকিছুই আজ সঙ্কুচিত। যে কারণে প্রজন্মের কেউ চাইলেও তাঁর মতো লিখতে পারবে না। সেটা সম্ভব না।

অনত্র তিনি লিখেছেন-
হেমন্ত আসিয়া গেছে, চিলের সোনালী ডানা হয়েছে খয়েরি
ঘুঘুর পালক যেন ঝরে গেছে, শালিকের সেই আর দেরি!
আকাশে বহু-জাতের পাখি, সারি সারি পাখি, পাখির কণ্ঠস্বরে মুখরিত আকাশ। এই দৃশ্য আজকের সময় দেখতে পাওয়া দুর্লভ। আকাশে পাখি কেন, মেঘও দেখতে পাওয়া যায় না দূষিত আবহাওয়ার কারণে। জীবনানন্দ দাশ সেই পরিবেশ দেখতে পেয়েছেন বলে লিখতে পেয়েছেন বিষয়টি এমনও নয়। তিনি অনেক কিছু লিখেছেন যা আপাতদৃষ্টিতে দেখতে পাওয়া যায়নি। এখানেই তার শ্রেষ্ঠত্ব।

  গাজাবাসীর দুরবস্থার কারণ ও মুক্তির পথ গাজার মুসলিমদের নিদারুণ অবস্থা দেখে অশ্রুপাত, হুংকার, ইহুদিদের পুণ্য বয়কট, সুযোগ পেয়ে ইহুদি হত্যা ইত...