আরব বিশ্ব ইহুদিদের দালাল
‘আরব বিশ্ব ইহুদিদের দালাল’ বলে মন্তব্য করেছে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী হাফেজ-মাওলানা, শিক্ষার্থীসহ অনেকে। গাজায় ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে গত শনিবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জোর হয় তারা। এসময় তারা বলেন- গত কয়েক শতাব্দী ধরে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের নির্বিচারে পশুর মতো হত্যা করা হচ্ছে অথচ পার্শ্ববর্তী মুসলিম দেশগুলো নির্বিকার, নিশ্চুপ। তাদেরই এই নীরবতাই প্রমাণ করে যে তারা ইহুদিদের সমীহ করে চলে, মুসলমানদের রক্ষার্থে তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।
.
এই কথার সূত্র ধরে হেযবুত তওহীদের সদস্য সুমাইয়া বিনতে হাসান বলেন- আরব কার দালাল সেটা নিয়ে কথা বলার আগে মুসলমানদের কেন এই দুর্দশা সেটা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন। মুসলমানদের তো এরকম অবস্থা ছিল না, তারা ছিল সেরা জাতি, শাসক জাতি, শিক্ষকের জাতি, কর্তৃত্বের জায়গায়। কেন তাদের এই অবস্থা হলো সেটা খুঁজে বের করা সময়ের দাবি। আপনারা অমুকের গায়ে, তমুকের গায়ে দোষ চাপিয়ে দিয়ে হয়তো আলোচনায় আসতে পারবেন, কিন্তু ফিলিস্তিনি মুসলমানদের দুরবস্থা দূর করতে পারবেন না। কারণ সেটা দূর করার সঠিক পথ আপনারা হারিয়েছেন।
.
আর সেই পথ হলো হেদায়াহ (সঠিক পথ)। যে পথে চলে আরবের বিচ্ছিন্ন-বিভক্ত, বর্বর, কুসংস্কারে আচ্ছন্ন লোকদের শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.) ঐক্যবদ্ধ করেছিল, এক জাতিতে পরিণত করেছিল এবং বিজয়ী করেছিল। আল্লাহ বলেন- তিনি হেদায়াহ ও সত্যদীন দিয়ে আপন রসুল প্রেরণ করেছেন যেন তিনি অন্যান্য সমস্ত দীনের ওপর সেটাকে বিজয়ী করেন, প্রতিষ্ঠা করেন (সুরা তওবা: ৩৩, ফাতেহা: ২৮, সফ: ৯)। এই মহান দায়িত্ব মানুষের সামনে পরিষ্কার করতে তিনি আবির্ভূত হয়েই বলেন- তিনি আদিষ্ট হয়েছেন মানবজাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর দীন মেনে নেয় (বুখারী)।
.
হেদায়াহ কী? হেদায়াহ হলো, জীবনে একমাত্র আল্লাহর হুকুম-বিধান ছাড়া আর কারো হুকুম-বিধান না মানার অঙ্গীকার। আর সত্যদীন হলো, মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বিচারিক, রাষ্ট্রীয়, সামরিক এবং আধ্যাত্মিক সকল সংকট সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান, যাকে এক কথায় বলে জীবনব্যবস্থা। সকল জীবনব্যবস্থার ভিত্তি থাকে। আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থার ভিত্তি হলো ঐ হেদায়াহ- আল্লাহ ছাড়া কোনো হুকুমদাতা নেই, এই সিদ্ধান্ত।
.
এই সত্যটি না বুঝে বিভিন্ন অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন, হুংকার দিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু কোনো পরিবর্তন আসে না। কারণ পরিবর্তনের মূলমন্ত্র যে তওহীদ কলেমা সেখান থেকে আপনারা বিচ্যুত। এই বিষয়টি যতক্ষণ না বুঝবেন এবং নিজেদের সংশোধন করবেন অর্থাৎ তওবা করে কলেমার অঙ্গীকারে আবদ্ধ হবেন, ঐক্যবদ্ধ হবেন, শৃঙ্খলিত হবে, আল্লাহর মনোনীত নেতার আনুগত্য করবেন, গাইরুল্লাহ থেকে আলাদা হবেন এবং আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে উত্তীর্ণ হবেন ততক্ষণ আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত হবেন না। আর আল্লাহর সাহায্য ছাড়া বিশ্বব্যাপী চলমান নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে মুসলমান জাতি রক্ষা পাবে না।l reaction
No comments:
Post a Comment